বন্ধুরা, ইটারনাল রিটার্নে সর্বোচ্চ স্কোর করাটা কি সবসময় একটা চ্যালেঞ্জ মনে হয় না? কতবার যে জয়ের দ্বারপ্রান্তে এসেও হঠাৎ করে সবকিছু উল্টে গেছে, আমার মনে হয় আপনারাও এই অভিজ্ঞতা অনেকবার করেছেন। আমি নিজেও এমন অনেক রাত কাটিয়েছি শুধু নতুন নতুন কৌশল আর মেটা পরিবর্তনের পিছনে ছুটে। কিন্তু আমার দীর্ঘদিনের এই পথচলায় কিছু দারুণ গোপন রহস্য আর কার্যকর টিপস আমি আবিষ্কার করেছি, যা আপনার খেলাকে অন্য স্তরে নিয়ে যেতে বাধ্য। এই মুহূর্তে গেমের সবচেয়ে কার্যকর বিল্ড আর সেরা খেলার পদ্ধতিগুলো নিয়েই আজকের এই লেখা। কীভাবে আপনি প্রতিটি ম্যাচে আপনার সেরাটা দিয়ে সর্বোচ্চ রেকর্ড গড়তে পারবেন, তার একদম সঠিক পথটি আজ আমি আপনাদের দেখিয়ে দেবো। নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে, চলুন জেনে নেওয়া যাক!
আপনার খেলার স্টাইলের সাথে মানানসই চরিত্র বেছে নিন

이터널 রিটার্ন-এ সাফল্যের প্রথম ধাপ হলো আপনার খেলার ধরন এবং মেটা অনুযায়ী সঠিক চরিত্র নির্বাচন করা। আমরা অনেকেই পছন্দের চরিত্র নিয়ে খেলতে ভালোবাসি, কিন্তু কখনও কখনও জেতার জন্য একটু বাস্তববাদী হতে হয়। আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, এমন অনেক সময় হয়েছে যখন আমি শুধুমাত্র নতুন বা জনপ্রিয় একটি চরিত্র দেখে খেলতে শুরু করেছি, কিন্তু আমার খেলার ধরন তার সাথে একদমই খাপ খায়নি। এতে কী হয় জানেন?
শুধু হতাশাই বাড়ে এবং টিমের উপর চাপ পড়ে। তাই সবার আগে নিজেকে প্রশ্ন করুন, আপনি কি আগ্রাসী খেলোয়াড়, নাকি একটু সতর্ক থেকে খেলতে পছন্দ করেন? আপনি কি ট্যাঙ্ক হয়ে টিমের সামনে দাঁড়াতে ভালোবাসেন, নাকি ড্যামেজ ডিলার হিসেবে পেছন থেকে আক্রমণ করতে পছন্দ করেন?
প্রতিটি প্যাচ আপডেটের সাথে সাথে মেটা চরিত্রগুলোও পরিবর্তিত হয়। কিছু চরিত্র শক্তিশালী হয়ে ওঠে, আবার কিছু দুর্বল হয়ে পড়ে। গেমের ওয়েবসাইটে বা বিভিন্ন ফোরামে নিয়মিত মেটা বিশ্লেষণ করা হয়, যা দেখে আপনি সহজেই বর্তমানের সবচেয়ে শক্তিশালী চরিত্রগুলো সম্পর্কে ধারণা পেতে পারেন। এতে আপনি শুধু একটি শক্তিশালী চরিত্র বেছে নিচ্ছেন না, বরং এমন একটি চরিত্র নিচ্ছেন যা আপনার খেলার স্টাইলকে আরও উন্নত করবে এবং আপনাকে জয়ের পথে এগিয়ে নিয়ে যাবে। মনে রাখবেন, কেবল শক্তিশালী হলেই হবে না, আপনার সাথে তার বোঝাপড়াটাও খুব জরুরি।
বর্তমান মেটা এবং আপনার পছন্দের সামঞ্জস্য
이터널 রিটার্ন-এ প্রতিটি প্যাচ আপডেটের সাথে মেটা (Most Effective Tactics Available) ক্রমাগত পরিবর্তিত হয়। গত প্যাচে যে চরিত্রটি অপ্রতিরোধ্য ছিল, এই প্যাচে হয়তো তার ক্ষমতা অনেকটাই কমে গেছে। আমার নিজের অভিজ্ঞতা বলে, আমি একবার আমার প্রিয় লিওনকে নিয়ে টানা কয়েকটা ম্যাচ হেরেছিলাম কারণ আমি মেটা পরিবর্তনের দিকে নজর দিইনি। পরে দেখলাম, লিওনের কিছু ক্ষমতা দুর্বল করে দেওয়া হয়েছে এবং অন্য একটি ট্যাঙ্ক চরিত্র অনেক শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। তাই, প্রতিটি নতুন প্যাচ আসার পর বিভিন্ন গেমপ্লে ফোরাম, স্ট্রিমিং চ্যানেল এবং অফিসিয়াল প্যাচ নোটসগুলো খুঁটিয়ে দেখুন। এতে আপনি জানতে পারবেন কোন চরিত্রগুলোর বর্তমানে ‘গেম ব্রেকিং’ ক্ষমতা রয়েছে এবং কোনগুলো আপনার খেলার ধরনের সাথে মানানসই। উদাহরণস্বরূপ, যদি আপনি আক্রমণাত্মক প্লেয়ার হন, তবে রেন, নাথান বা এমা-এর মতো চরিত্রগুলো আপনার জন্য ভালো হতে পারে। আবার যদি আপনি একটু রক্ষণাত্মক বা সাপোর্টিভ খেলতে পছন্দ করেন, তাহলে মারটি বা হিয়োনের মতো চরিত্রগুলো বেশি কার্যকর হবে। মেটা শুধু চরিত্রের উপর নির্ভর করে না, এটি আইটেম বিল্ড এবং রুটকেও প্রভাবিত করে। তাই, শুধু চরিত্র নির্বাচন নয়, পুরো গেমপ্ল্যানটাই মেটা অনুযায়ী সাজানো উচিত।
আপনার নিজস্ব খেলার ধরন আবিষ্কার
অনেকেই মনে করেন, সেরা খেলোয়াড়দের কপি করা মানেই ভালো খেলা। কিন্তু আমার মনে হয়, আপনার খেলার স্টাইল আবিষ্কার করাটা আরও জরুরি। আপনি হয়তো একজন টপ র্যাঙ্কারকে দেখে অ্যালেক্স নিয়ে খেলতে শুরু করলেন, কিন্তু দেখলেন যে অ্যালেক্সের জটিল মেকানিজম আপনার জন্য নয়। এর ফলে বারবার আপনি ভুল করছেন এবং আপনার টিমেরও ক্ষতি হচ্ছে। আমি নিজেও শুরুর দিকে এমন ভুল অনেক করেছি। বিভিন্ন ধরনের চরিত্র নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করুন। সলো, ডুও এবং স্কোয়াড মোডে বিভিন্ন ভূমিকায় খেলুন। কোন চরিত্রে আপনার সবচেয়ে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ হয়, কোন চরিত্রের স্কিলগুলো আপনার কাছে সহজেই ব্যবহারযোগ্য মনে হয়, তা বোঝার চেষ্টা করুন। আপনি যখন আপনার নিজস্ব খেলার স্টাইল খুঁজে পাবেন, তখন কেবল মেটা নয়, বরং যেকোনো পরিস্থিতিতেই আপনি নিজের সেরাটা দিতে পারবেন। ধরুন, আপনি এমন একজন খেলোয়াড় যিনি শত্রুদের গতিবিধি আগে থেকে অনুমান করতে পারেন এবং ফাঁদ তৈরি করতে ভালোবাসেন, তাহলে লেয়ন বা জ্যান আপনার জন্য উপযুক্ত হতে পারে। অন্যদিকে, যদি আপনি দ্রুত ড্যামেজ দিয়ে পালাতে পছন্দ করেন, তাহলে নাথান বা সিলভিয়া হতে পারে আপনার পছন্দের চরিত্র। নিজেকে জানুন, আপনার শক্তি এবং দুর্বলতাগুলোকে বুঝুন, এবং সে অনুযায়ী চরিত্র নির্বাচন করুন।
সেরা রুটের পরিকল্পনা এবং কার্যকর আইটেম বিল্ড
이터널 রিটার্ন-এ ভালো স্কোর করার জন্য শুধু চরিত্র নির্বাচনই যথেষ্ট নয়, একটি সুপরিকল্পিত রুট এবং কার্যকর আইটেম বিল্ড খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা প্রায়শই খেলার সময় তাড়াহুড়ো করে আইটেম সংগ্রহ করতে গিয়ে ভুল জোনে চলে যাই বা অপ্রয়োজনীয় সময় নষ্ট করি। আমার অনেক রাত কেটেছে শুধু সেরা রুট খোঁজার পেছনে, যা আমাকে দ্রুত শক্তিশালী করে তুলতে সাহায্য করবে। যখন আপনি একটি ম্যাচের শুরুতেই আপনার প্রয়োজনীয় সব আইটেম দ্রুত সংগ্রহ করতে পারেন, তখন আপনি প্রতিপক্ষের চেয়ে অনেক এগিয়ে থাকেন। প্রথম কয়েক মিনিটেই আপনার পাওয়ার স্পাইক নিশ্চিত করা মানেই হলো ম্যাচের মাঝপথে প্রতিপক্ষকে সহজেই কাবু করা। সঠিক রুট আপনাকে শুধু প্রয়োজনীয় আইটেমই এনে দেয় না, বরং এটি আপনাকে নিরাপদ জোনে রেখে অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগও করে দেয়। অনেক সময় আমরা দেখি, কিছু খেলোয়াড় ম্যাপের এক কোণ থেকে অন্য কোণে ছোটাছুটি করছে শুধু একটি নির্দিষ্ট আইটেম পাওয়ার জন্য, আর এতে করে তাদের মূল্যবান সময় এবং স্বাস্থ্য দুটোই নষ্ট হয়। তাই খেলার আগেই আপনার পছন্দের চরিত্রের জন্য সেরা রুটটি চিহ্নিত করে রাখুন এবং খেলার সময় সেই রুটকে কঠোরভাবে অনুসরণ করুন। এতে আপনার আইটেম সংগ্রহ দ্রুত হবে এবং আপনি দ্রুত যুদ্ধে অংশ নিতে পারবেন।
দ্রুত আইটেম সংগ্রহ এবং পাওয়ার স্পাইক অর্জন
প্রতিটি Eternal Return ম্যাচে, শুরুর দিকের আইটেম সংগ্রহ খেলাকে অনেকটাই প্রভাবিত করে। আপনি হয়তো ভাবছেন, ‘আরে বাবা, শুধু কয়েকটা আইটেম তো!’ কিন্তু এই ‘কয়েকটা আইটেম’ই আপনাকে অন্যান্য খেলোয়াড়দের তুলনায় বেশ এগিয়ে দিতে পারে। আমার নিজের ক্ষেত্রে এমন হয়েছে যে, আমি একটি নতুন রুট অনুসরণ করে মাত্র ৩-৪ মিনিটের মধ্যে আমার কোর আইটেমগুলো সংগ্রহ করে ফেলেছি। এর ফলে কী হয়েছে?
আমি অন্যান্য খেলোয়াড়দের সাথে লড়াই করার জন্য প্রস্তুত ছিলাম যখন তারা তখনও তাদের প্রাথমিক আইটেম খুঁজছিল। এই দ্রুত আইটেম সংগ্রহকে ‘পাওয়ার স্পাইক’ বলা হয়। যখন আপনি দ্রুত আপনার প্রধান অস্ত্র, বর্ম এবং আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র পেয়ে যান, তখন আপনার আক্রমণের ক্ষমতা এবং প্রতিরক্ষা অনেক বেড়ে যায়। এর ফলে আপনি সহজেই অন্যান্য খেলোয়াড়দের সাথে এনগেজ করতে পারেন, বন্য প্রাণী মেরে এক্সপি (XP) অর্জন করতে পারেন এবং এমনকি কিলও পেতে পারেন। একটি কার্যকর রুট ম্যাপের এমন এলাকাগুলোকে সংযুক্ত করে যেখানে আপনার প্রয়োজনীয় সব উপাদান পাওয়া যায়। এতে আপনাকে অপ্রয়োজনীয়ভাবে জোনে জোনে ছুটতে হয় না এবং আপনি সময় বাঁচাতে পারেন। রুট প্ল্যান করার সময়, ম্যাপের বিপদজনক এলাকাগুলো এড়িয়ে চলুন এবং এমন এলাকা বেছে নিন যেখানে আইটেম পাওয়া সহজ এবং অন্য খেলোয়াড়দের মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনা কম।
পরিস্থিতি অনুযায়ী বিল্ড পরিবর্তন
আমরা প্রায়শই একটি নির্দিষ্ট আইটেম বিল্ড নিয়ে খেলতে পছন্দ করি, কিন্তু ইটারনাল রিটার্ন-এ সফল হওয়ার জন্য পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে নেওয়াটা খুব জরুরি। ধরা যাক, আপনি একটি নির্দিষ্ট বিল্ড নিয়ে খেলতে নামলেন, কিন্তু দেখলেন প্রতিপক্ষ টিমে অনেকগুলো ম্যাজিক ড্যামেজ (AP) ডিলার আছে। আপনার বিল্ডে যদি ম্যাজিক রেজিস্টেন্স কম থাকে, তাহলে আপনি সহজেই মারা যাবেন। আমি নিজে অনেকবার এই ভুল করেছি, একটি ফিক্সড বিল্ড নিয়ে খেলতে গিয়ে দেখেছি প্রতিপক্ষের কারণে আমি কোনো ড্যামেজই দিতে পারছি না বা দ্রুত মারা যাচ্ছি। তাই, প্রতিটি ম্যাচের আগে প্রতিপক্ষ টিমকে দেখে আপনার বিল্ড কিছুটা পরিবর্তন করার মানসিকতা রাখুন। উদাহরণস্বরূপ, যদি প্রতিপক্ষ টিমে অনেক ফিজিক্যাল ড্যামেজ (AD) চরিত্র থাকে, তাহলে আপনার বিল্ডে আর্মার (Armor) বাড়ানোর চেষ্টা করুন। আবার যদি তারা ম্যাজিক ড্যামেজ দেয়, তাহলে ম্যাজিক রেজিস্টেন্স (Magic Resistance) বাড়ান। শুধু তাই নয়, ম্যাচের মাঝখানেও আপনার বিল্ড পরিবর্তন করতে হতে পারে। ধরুন, আপনি খেলার মাঝপথে দেখলেন আপনার টিমের ড্যামেজ আউটপুট কম, তখন আপনার বিল্ডে কিছু ড্যামেজ আইটেম যোগ করতে পারেন। অথবা, যদি আপনার টিমের টিকে থাকার ক্ষমতা কম হয়, তাহলে কিছু ডিফেন্সিভ আইটেম যোগ করুন। এটি কেবল আপনার টিমের শক্তি বাড়াবে না, বরং আপনাকে আরও নমনীয় খেলোয়াড় হিসেবে গড়ে তুলবে।
আমার পরীক্ষিত কিছু কার্যকর রুট
আমার দীর্ঘদিনের Eternal Return খেলার অভিজ্ঞতা থেকে কিছু রুট আমি নিজে তৈরি করেছি এবং সেগুলো দারুণ কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। এই রুটগুলো বিশেষ করে নতুনদের জন্য এবং যারা দ্রুত পাওয়ার স্পাইক অর্জন করতে চান তাদের জন্য খুবই উপকারী। যেমন, ধরুন আপনি হাইপারক্যারী (Hypercarry) চরিত্র নিয়ে খেলছেন, তাহলে “চ্যাপেল (Chapel) -> স্কুল (School) -> বিচ (Beach)” রুটটি খুব ভালো কাজ করে। এই রুটে আপনি দ্রুত আপনার প্রধান অস্ত্র এবং কিছু গুরুত্বপূর্ণ বর্মের অংশ পেয়ে যাবেন। আমি দেখেছি, এই রুটে গিয়ে আমি প্রায় প্রতি ম্যাচেই প্রথম কয়েকজনের মধ্যে আমার বিল্ড শেষ করতে পেরেছি। আরেকটা দারুণ রুট আছে ট্যাঙ্ক বা ব্রুইজার (Bruiser) চরিত্রের জন্য: “ডকস (Docks) -> ফ্যাক্টরি (Factory) -> অ্যাভিনিউ (Avenue)”। এই রুটে আপনি ভালো পরিমাণে ডিফেন্সিভ আইটেম এবং হেলথ আইটেম পাবেন, যা আপনাকে শুরুর দিকে টিকে থাকতে সাহায্য করবে। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, এই রুটগুলো কেবল একটি গাইডলাইন। আপনাকে ম্যাপে অন্যান্য খেলোয়াড়দের গতিবিধি দেখে কিছুটা পরিবর্তন করতে হতে পারে। যদি দেখেন আপনার রুটে অন্য কোনো খেলোয়াড় আগেই নেমে পড়েছে, তাহলে বিকল্প রাস্তা বেছে নিতে দ্বিধা করবেন না। মনে রাখবেন, নমনীয়তা সাফল্যের চাবিকাঠি।
মানচিত্র নিয়ন্ত্রণ এবং উদ্দেশ্যভিত্তিক কৌশল
ইটারনাল রিটার্ন-এ কেবল মারামারি করলেই জেতা যায় না, বরং কৌশলগতভাবে মানচিত্র নিয়ন্ত্রণ করা এবং বিভিন্ন উদ্দেশ্য (Objectives) সঠিকভাবে ব্যবহার করাও সমান গুরুত্বপূর্ণ। আমরা অনেকেই শুধুমাত্র কিল পাওয়ার পেছনে ছুটি, কিন্তু তাতে করে আমরা ম্যাপের গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো ভুলে যাই। আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা বলে, এমন অনেক ম্যাচ আমি হেরেছি যেখানে আমার টিম কিলে এগিয়ে ছিল, কিন্তু ম্যাপ কন্ট্রোল এবং অবজেক্টিভ যেমন ওয়াইল্ড অ্যানিমেল বা নিষিদ্ধ এলাকার সঠিক ব্যবহার না করার কারণে শেষ পর্যন্ত হেরে গেছি। ম্যাপ নিয়ন্ত্রণ মানে হলো, আপনি ম্যাপের গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে আপনার দখল বজায় রাখছেন, যেখানে মূল্যবান রিসোর্স পাওয়া যায় বা স্ট্র্যাটেজিক অ্যাডভান্টেজ থাকে। যেমন, কিছু এলাকায় বেশি বন্য প্রাণী থাকে যা আপনাকে দ্রুত এক্সপি এবং আইটেম দেয়। আবার কিছু এলাকা আপনাকে হাইপারলুপ ব্যবহার করে দ্রুত এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাওয়ার সুবিধা দেয়। এই সমস্ত বিষয়গুলো বুঝে খেলার সময় ব্যবহার করা মানেই হলো প্রতিপক্ষের উপর চাপ তৈরি করা এবং তাদের গতিবিধি সীমিত করা। আপনি যখন ম্যাপের উপর আপনার নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেন, তখন আপনি শুধু নিজেকে সুরক্ষিত রাখেন না, বরং আপনার টিমকেও সুরক্ষিত রাখেন এবং জয়ের পথে আরও এক ধাপ এগিয়ে যান।
বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা এবং এক্সপি সুবিধা
ইটারনাল রিটার্ন-এ কিল পাওয়া যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি বন্য প্রাণী মেরে এক্সপি এবং আইটেম সংগ্রহ করাও খুবই জরুরি। আমার মনে আছে, একবার আমার টিম কিল পাওয়ার পেছনে এতটাই ব্যস্ত ছিল যে আমরা ম্যাপের বন্য প্রাণীগুলো মারার কথাই ভুলে গিয়েছিলাম। ফলাফল?
আমরা এক্সপিতে প্রতিপক্ষের চেয়ে অনেক পিছিয়ে পড়েছিলাম এবং শেষ পর্যন্ত ম্যাচ হেরেছিলাম। বন্য প্রাণী, বিশেষ করে আলফা (Alpha), ওমেগা (Omega) এবং উইক জোন (Wickeline)-এর মতো বস প্রাণীগুলো আপনাকে প্রচুর এক্সপি, ক্রেডিট এবং শক্তিশালী বাফ (Buff) দেয়। এই বাফগুলো ম্যাচের শেষের দিকে পার্থক্য গড়ে দিতে পারে। তাই, আপনার রুটের মধ্যে বন্য প্রাণীগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করুন এবং চেষ্টা করুন যত দ্রুত সম্ভব তাদের মেরে এক্সপি সংগ্রহ করতে। মনে রাখবেন, যদি আপনি বন্য প্রাণী মেরে এগিয়ে থাকেন, তাহলে প্রতিপক্ষ আপনার থেকে দুর্বল থাকবে এবং তাদের সাথে লড়াই করা আপনার জন্য সহজ হবে। এছাড়াও, বন্য প্রাণীগুলো নিয়মিত স্পন (Spawn) হয়। তাদের স্পন টাইমিং মনে রাখা এবং সময় মতো মেরে ফেলা টিমের জন্য বিশাল সুবিধা নিয়ে আসে। বিশেষ করে আলফা এবং ওমেগা’র বাফগুলো শেষের দিকের ফাইটে আপনাকে এবং আপনার টিমকে এক বিশাল সুবিধা দেবে, যা হয়তো আপনাদের জেতা ম্যাচকে আরও সহজ করে তুলবে।
ডমিন্যান্ট প্লে এবং সেফ জোন তৈরি
মানচিত্র নিয়ন্ত্রণ শুধু বন্য প্রাণী মারার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এটি প্রতিপক্ষের উপর চাপ তৈরি করা এবং আপনার জন্য একটি নিরাপদ খেলার ক্ষেত্র তৈরি করার বিষয়েও। আমি দেখেছি, যে টিম ম্যাপের নির্দিষ্ট অঞ্চলগুলোতে আধিপত্য বজায় রাখতে পারে, সেই টিমের জয়ের সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। ডমিন্যান্ট প্লে মানে হলো, আপনি ম্যাপের গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলগুলোতে আপনার উপস্থিতি বজায় রাখছেন, প্রতিপক্ষকে সেই এলাকাগুলোতে যেতে বাধা দিচ্ছেন এবং তাদের রিসোর্স সংগ্রহে অসুবিধা সৃষ্টি করছেন। উদাহরণস্বরূপ, যদি একটি নির্দিষ্ট জোনে মূল্যবান আইটেম বা বন্য প্রাণী থাকে, তাহলে সেই জোনটিকে আপনার দখলে রাখুন। এটি আপনি ঐ জোনে নিয়মিত প্যাট্রোল করে, ক্যামেরা (Camera) বসিয়ে বা এমনকি প্রতিপক্ষকে ঐ জোনে ঢুকতে বাধা দিয়ে করতে পারেন। এছাড়াও, “সেফ জোন” তৈরি করা মানে হলো, ম্যাপের এমন কিছু এলাকা আপনার নিয়ন্ত্রণে রাখা যেখানে আপনি নিরাপদে আইটেম তৈরি করতে পারেন, স্বাস্থ্য পুনরুদ্ধার করতে পারেন বা এমনকি শত্রুদের অ্যামবুশ (Ambush) করার জন্য অপেক্ষা করতে পারেন। এই সেফ জোনগুলো আপনার টিমকে মানসিক প্রশান্তি দেয় এবং তাদের কৌশলগতভাবে এগিয়ে যেতে সাহায্য করে। একটি ভালো ডমিন্যান্ট প্লে এবং সেফ জোন ক্রিয়েশন আপনাকে গেমের গতি নিয়ন্ত্রণ করতে এবং প্রতিপক্ষকে আপনার শর্তে খেলতে বাধ্য করতে সাহায্য করবে।
সফল টিমওয়ার্ক: একলা চলো নীতি নয়
ইটারনাল রিটার্ন একটি টিম-ভিত্তিক খেলা, এবং এখানে একা একা সবকিছু করা প্রায় অসম্ভব। আমরা অনেকেই ব্যক্তিগত দক্ষতা দেখানোর জন্য তাড়াহুড়ো করি, কিন্তু এতে করে টিমের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব দেখা দেয় এবং শেষ পর্যন্ত হেরে যাই। আমার নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, অনেকবারই আমি ব্যক্তিগতভাবে ভালো খেলেছি, অনেক কিলও পেয়েছি, কিন্তু টিমের বাকি সদস্যদের সাথে সঠিক বোঝাপড়ার অভাবে ম্যাচ জিততে পারিনি। টিমওয়ার্ক মানে শুধু একসাথে চলা নয়, এর মানে হলো একে অপরের শক্তি ও দুর্বলতা বোঝা, সঠিকভাবে যোগাযোগ করা এবং ম্যাচের প্রতিটি মুহূর্তে একে অপরকে সমর্থন করা। যখন একটি টিম একে অপরের সাথে নিখুঁতভাবে সমন্বয় করে খেলে, তখন তারা প্রতিপক্ষের উপর বিশাল চাপ সৃষ্টি করতে পারে এবং সহজেই জয়ের পথে এগিয়ে যেতে পারে। আপনার টিমের প্রতিটি সদস্যের একটি নির্দিষ্ট ভূমিকা থাকে এবং সেই ভূমিকা অনুযায়ী কাজ করাটা খুব জরুরি। কেউ হয়তো ট্যাঙ্ক হয়ে সামনে থেকে ড্যামেজ শোষণ করবে, কেউ ড্যামেজ ডিলার হিসেবে প্রতিপক্ষকে আক্রমণ করবে এবং কেউ সাপোর্টিভ হিসেবে টিমের স্বাস্থ্য ও বাফ বজায় রাখবে। এই সমস্ত ভূমিকাগুলো যখন একসাথে কাজ করে, তখনই একটি শক্তিশালী টিম তৈরি হয়।
যোগাযোগ এবং সমন্বয়ের গুরুত্ব
ইটারনাল রিটার্ন-এ সফল টিমওয়ার্কের মূল চাবিকাঠি হলো স্পষ্ট এবং কার্যকর যোগাযোগ। আমি দেখেছি, যে টিমগুলো ইন-গেম ভয়েস চ্যাট বা পিন সিস্টেম ব্যবহার করে নিজেদের মধ্যে নিয়মিত যোগাযোগ রাখে, তারা অন্যদের চেয়ে অনেক এগিয়ে থাকে। শুধু আক্রমণের সময় নয়, বন্য প্রাণী মারার পরিকল্পনা, আইটেম সংগ্রহ, প্রতিপক্ষের অবস্থান জানানো, এমনকি কখন পিছু হটা উচিত, এই সমস্ত বিষয়ে নিয়মিত যোগাযোগ রাখাটা খুব জরুরি। একবার আমি আমার বন্ধুদের সাথে খেলছিলাম, কিন্তু আমরা ভয়েস চ্যাট ব্যবহার করছিলাম না। ফলস্বরূপ, আমি একটি প্রতিপক্ষকে আক্রমণ করতে গেলাম, কিন্তু আমার টিমমেটরা জানতই না যে আমি কী করছি, ফলে আমি একাই মারা গেলাম। যদি আমরা যোগাযোগ রাখতাম, তাহলে হয়তো আমরা একসাথে আক্রমণ করতে পারতাম এবং একটি কিল অর্জন করতে পারতাম। এছাড়াও, সমন্বয় মানে হলো টিমের প্রতিটি সদস্যের একে অপরের দক্ষতার সাথে পরিচিত হওয়া এবং সেই অনুযায়ী খেলার পরিকল্পনা করা। উদাহরণস্বরূপ, যদি আপনার টিমে একটি শক্তিশালী ইনিশিয়েটর (Initiator) থাকে, তাহলে সে যখন আক্রমণ শুরু করবে, তখন বাকি টিমের সদস্যরা তার পেছনে থেকে ড্যামেজ দিতে বা সাপোর্ট দিতে প্রস্তুত থাকবে। এই ধরনের সমন্বয় আপনার টিমকে অনেক শক্তিশালী করে তোলে।
ভূমিকা পালন এবং টিমের দুর্বলতা ঢাকা
প্রতিটি টিমে একজন খেলোয়াড়ের একটি নির্দিষ্ট ভূমিকা থাকে, যেমন ট্যাঙ্ক, ড্যামেজ ডিলার (DPS), বা সাপোর্টার। এই ভূমিকাগুলো সঠিকভাবে পালন করা এবং টিমের দুর্বলতাগুলোকে ঢেকে রাখা টিমওয়ার্কের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। আমি একবার একটি টিমে খেলছিলাম যেখানে তিনজনই ড্যামেজ ডিলার ছিল, কোনো ট্যাঙ্ক বা সাপোর্টার ছিল না। ফলাফল?
আমরা প্রতিপক্ষকে যথেষ্ট ড্যামেজ দিতে পারলেও, আমাদের টিকে থাকার ক্ষমতা ছিল না এবং সহজেই মারা যাচ্ছিলাম। আপনার টিমের গঠনে ভারসাম্য বজায় রাখাটা খুব জরুরি। যদি আপনার টিমে একজন ট্যাঙ্ক থাকে, তাহলে সে সামনে থেকে ড্যামেজ শোষণ করবে এবং ড্যামেজ ডিলারদের জন্য একটি নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করবে। আবার যদি আপনার টিমে একজন সাপোর্টার থাকে, তাহলে সে আপনার টিমের স্বাস্থ্য বজায় রাখবে এবং বাফ দেবে। এছাড়াও, প্রতিটি খেলোয়াড়ের কিছু দুর্বলতা থাকে। একজন ট্যাঙ্ক হয়তো বেশি ড্যামেজ দিতে পারে না, আবার একজন ড্যামেজ ডিলার হয়তো সহজেই মারা যেতে পারে। একটি ভালো টিম এই দুর্বলতাগুলোকে ঢেকে রাখে। যেমন, ট্যাঙ্ক ড্যামেজ ডিলারকে রক্ষা করবে এবং ড্যামেজ ডিলার ট্যাঙ্কের জন্য কিল আনবে। এই ধরনের বোঝাপড়া এবং ভূমিকা পালন আপনার টিমকে অপরাজেয় করে তুলতে পারে।
আক্রমণ ও প্রতিরক্ষা কৌশল এবং পজিশনিং
이터널 রিটার্ন-এর প্রতিটি লড়াই কেবল স্কিল শট মারার বা ড্যামেজ দেওয়ার বিষয় নয়, এটি কৌশলগতভাবে পজিশনিং এবং আক্রমণের সঠিক সময় নির্বাচন করার উপরও নির্ভর করে। আমরা অনেকেই তাড়াহুড়ো করে শত্রুদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ি, কিন্তু এতে করে আমরা নিজেদেরকে দুর্বল অবস্থানে নিয়ে আসি এবং সহজেই প্রতিপক্ষের হাতে মারা যাই। আমার নিজের অভিজ্ঞতা বলে, আমি অনেকবারই একটি ফাইটের শুরুতে ভুল পজিশনিং-এর কারণে দ্রুত মারা গেছি, যার ফলে আমার টিমের উপর চাপ পড়েছে। সঠিক পজিশনিং মানে হলো, আপনি এমন একটি জায়গায় অবস্থান করছেন যেখানে আপনি প্রতিপক্ষের আক্রমণ থেকে সুরক্ষিত থাকবেন, কিন্তু একই সাথে আপনি তাদের উপর কার্যকরভাবে আক্রমণ করতে পারবেন। এটি বিশেষ করে রেঞ্জড (Ranged) চরিত্রের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ, যারা পেছন থেকে ড্যামেজ দিতে পারে। এছাড়াও, কখন আক্রমণ শুরু করবেন এবং কখন পিছু হটবেন, তা বোঝাটা ফাইটের ফলাফলে বিশাল পার্থক্য গড়ে দেয়। একটি ভালো ফাইট শুরু করার সময় আপনার টিমের সব স্কিল প্রস্তুত আছে কিনা, প্রতিপক্ষের গুরুত্বপূর্ণ স্কিলগুলো কি ইতোমধ্যে ব্যবহার করা হয়েছে কিনা, এই সমস্ত বিষয়গুলো বিবেচনা করা উচিত।
স্কিল শট ডজিং এবং ড্যামেজ ট্রেডিং
ইটারনাল রিটার্ন-এর লড়াইয়ে প্রতিপক্ষের স্কিল শট এড়িয়ে চলা এবং নিজের স্কিল শট সঠিকভাবে ব্যবহার করাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমি দেখেছি, যে খেলোয়াড়রা ভালোভাবে স্কিল শট ডজ করতে পারে, তারা অন্যদের চেয়ে অনেক বেশি সময় ধরে লড়াইয়ে টিকে থাকে। আপনি যখন একটি স্কিল শট ডজ করেন, তখন আপনি শুধু ড্যামেজ এড়িয়ে যান না, বরং প্রতিপক্ষকে তাদের একটি মূল্যবান স্কিল নষ্ট করতে বাধ্য করেন। এর ফলে তারা ক্ষণিকের জন্য দুর্বল হয়ে পড়ে এবং আপনি তাদের উপর পাল্টা আক্রমণ করার সুযোগ পান। এছাড়াও, “ড্যামেজ ট্রেডিং” মানে হলো, আপনি প্রতিপক্ষের উপর যতটা ড্যামেজ দিচ্ছেন, তার চেয়ে কম ড্যামেজ নিজে নিচ্ছেন। এটি ছোট ছোট লড়াই বা ‘পোকিং’ (Poking) এর সময় খুব জরুরি। উদাহরণস্বরূপ, আপনি একটি স্কিল শট দিয়ে প্রতিপক্ষের স্বাস্থ্য কিছুটা কমালেন এবং দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরে এলেন, যাতে প্রতিপক্ষ আপনার উপর পাল্টা আক্রমণ করতে না পারে। এই ধরনের ড্যামেজ ট্রেডিং আপনাকে ধীরে ধীরে প্রতিপক্ষের স্বাস্থ্য কমিয়ে দেবে এবং যখন একটি পূর্ণাঙ্গ ফাইট শুরু হবে, তখন আপনি একটি বিশাল সুবিধা পাবেন। স্কিল শট ডজিং এবং ড্যামেজ ট্রেডিং অনুশীলন করার জন্য, আপনি ট্রেনিং মোড ব্যবহার করতে পারেন এবং বিভিন্ন পরিস্থিতিতে আপনার প্রতিক্রিয়ার গতি বাড়ানোর চেষ্টা করতে পারেন।
কখন পিছু হটবেন আর কখন ঝাঁপিয়ে পড়বেন

ফাইটের সময় কখন পিছু হটবেন আর কখন ঝাঁপিয়ে পড়বেন, তা বোঝাটা একজন অভিজ্ঞ খেলোয়াড়ের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। আমি অনেকবারই দেখেছি, টিমমেটরা একটি খারাপ ফাইটে অতিরিক্ত সময় ধরে লড়াই করে এবং শেষ পর্যন্ত সবাই মারা যায়। এতে করে প্রতিপক্ষ একটি বিশাল সুবিধা পেয়ে যায়। কখন পিছু হটবেন তা বুঝতে হলে আপনাকে কয়েকটি বিষয় বিবেচনা করতে হবে: আপনার টিমের স্বাস্থ্য এবং মানা (Mana), প্রতিপক্ষের স্বাস্থ্য এবং মানা, আপনার স্কিলগুলোর কুলডাউন (Cooldown) এবং প্রতিপক্ষের স্কিলগুলোর কুলডাউন। যদি আপনার টিমের স্বাস্থ্য কম থাকে এবং স্কিলগুলো কুলডাউনে থাকে, তাহলে দ্রুত পিছু হটা উচিত। আবার যদি প্রতিপক্ষের স্বাস্থ্য কম থাকে এবং তাদের গুরুত্বপূর্ণ স্কিলগুলো কুলডাউনে থাকে, তাহলে এটি তাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ার একটি ভালো সুযোগ। এছাড়াও, ম্যাপের অবস্থান এবং সেফ জোনগুলো বিবেচনা করুন। আপনি কি এমন একটি জায়গায় ফাইট করছেন যেখানে আপনার টিমের পিছু হটার জন্য কোনো নিরাপদ জায়গা নেই?
নাকি আপনি এমন একটি জায়গায় ফাইট করছেন যেখানে আপনি সহজেই নিরাপদ স্থানে সরে আসতে পারবেন? এই সমস্ত বিষয়গুলো বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত নিন। অনেক সময়, একটি ফাইট থেকে পিছু হটা মানেই হার নয়, বরং এটি একটি নতুন এবং আরও ভালো ফাইটের জন্য প্রস্তুত হওয়া। একটি ম্যাচ জিততে হলে, আপনাকে বুদ্ধিমত্তার সাথে লড়াই করতে হবে, কেবল আবেগপ্রবণ হয়ে নয়।
মানসিকতা এবং খেলার ধারাবাহিকতা
ইটারনাল রিটার্ন-এ ভালো রেকর্ড করার জন্য শুধু গেমিং দক্ষতা থাকলেই হয় না, আপনার মানসিকতাও একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আমরা অনেকেই একটি খারাপ ম্যাচের পর হতাশ হয়ে যাই বা ভুল করার পর নিজেদের উপর বিশ্বাস হারিয়ে ফেলি। আমার নিজের ক্ষেত্রে এমন হয়েছে, একটি ম্যাচে কিছু ভুল করার পর আমি এতটাই হতাশ হয়ে পড়েছি যে পরের ম্যাচগুলোতেও আমার খেলা খারাপ হয়েছে। কিন্তু একজন সফল খেলোয়াড় হিসেবে আপনাকে আপনার মানসিকতাকে নিয়ন্ত্রণ করতে শিখতে হবে। ভুল করাটা খেলারই অংশ, কিন্তু সেই ভুল থেকে শিক্ষা নেওয়া এবং পরবর্তীতে সেগুলো পুনরাবৃত্তি না করাটা আসল বিষয়। ধারাবাহিকতা বজায় রাখা মানে হলো, প্রতিটি ম্যাচে আপনার সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করা, আপনি জিতুন বা হারুন না কেন। এটি আপনাকে দীর্ঘমেয়াদে একজন ভালো খেলোয়াড় হিসেবে গড়ে তুলবে। একটি ইতিবাচক মানসিকতা নিয়ে খেলা শুরু করা এবং প্রতিটি ম্যাচের শেষে আপনার পারফরম্যান্স পর্যালোচনা করা আপনাকে ক্রমাগত উন্নতি করতে সাহায্য করবে।
ভুলের থেকে শেখা এবং পর্যালোচনা
প্রত্যেক খেলোয়াড়ই ভুল করে, আমিও করি। কিন্তু একজন ভালো খেলোয়াড় সেই ভুলগুলো থেকে শেখে এবং নিজেকে উন্নত করে। আমি আমার প্রতিটি ম্যাচের পর, এমনকি যখন আমি জিতি তখনও, আমার গেমপ্লে পুনরায় দেখি। আমি ভিডিও রেকর্ড করি এবং সেগুলো বিশ্লেষণ করি। আমি দেখি কোথায় আমি ভুল পজিশনিং করেছিলাম, কোন স্কিল শটটি আমার ঠিকভাবে মারা উচিত ছিল, বা কখন আমি পিছু হটলে ভালো হতো। এটি শুনতে একটু একঘেয়ে লাগতে পারে, কিন্তু আমার বিশ্বাস করুন, এই অভ্যাসটি আমাকে একজন খেলোয়াড় হিসেবে অনেক উন্নত করেছে। যখন আপনি আপনার ভুলগুলো চিহ্নিত করতে পারবেন, তখন আপনি সেগুলো শুধরানোর জন্য কাজ করতে পারবেন। শুধু তাই নয়, আপনি আপনার টিমমেটদের সাথেও আপনার গেমপ্লে নিয়ে আলোচনা করতে পারেন। তাদের মতামত আপনার ভুলগুলো দেখতে সাহায্য করবে যা হয়তো আপনি নিজে দেখতে পাচ্ছেন না। প্রতিটি ভুলকে শেখার সুযোগ হিসেবে নিন, হতাশ হওয়ার কারণ হিসেবে নয়। মনে রাখবেন, ইটারনাল রিটার্ন একটি জটিল খেলা, এবং এতে পারদর্শী হতে হলে অনুশীলন এবং শেখার কোনো বিকল্প নেই।
চাপ সামলানো এবং শান্ত থাকা
ইটারনাল রিটার্ন-এর মতো প্রতিযোগিতামূলক খেলায় চাপ অনুভব করাটা খুবই স্বাভাবিক। যখন আপনি একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে থাকেন, যেমন উইক জোন ফাইটে বা শেষ জোনে প্রতিপক্ষের মুখোমুখি, তখন চাপ আপনাকে ভুল সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করতে পারে। আমার মনে আছে, একবার একটি টাইট ম্যাচে যখন আমি শেষ ৩ জনের মধ্যে ছিলাম, তখন আমি এতটাই নার্ভাস ছিলাম যে আমার স্কিল শটগুলো মিস হচ্ছিল। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে আমি শিখেছি কীভাবে চাপ সামলাতে হয় এবং শান্ত থাকতে হয়। চাপ সামলানোর একটি উপায় হলো শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়ন্ত্রণ করা। যখন আপনি চাপ অনুভব করবেন, তখন গভীর শ্বাস নিন এবং ধীরে ধীরে ছাড়ুন। এটি আপনার মনকে শান্ত করতে সাহায্য করবে। এছাড়াও, আপনি যদি একটি ম্যাচে অনেক ভুল করেন বা আপনার টিমমেটরা আপনার উপর রাগ করে, তখন ইতিবাচক থাকুন। মনে রাখবেন, এটি কেবল একটি খেলা এবং এখানে ভুল হওয়াটা স্বাভাবিক। নিজেকে মনে করিয়ে দিন যে আপনি পরের রাউন্ডে আরও ভালো করবেন। শান্ত এবং ইতিবাচক মানসিকতা নিয়ে খেললে আপনি আরও ভালো সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন এবং আপনার পারফরম্যান্সও উন্নত হবে। মনে রাখবেন, সফল খেলোয়াড়রা কেবল শারীরিকভাবেই নয়, মানসিকভাবেও শক্তিশালী হন।
ইভেন্টের সঠিক ব্যবহার এবং অতিরিক্ত সুবিধা
ইটারনাল রিটার্ন ম্যাপে বিভিন্ন ইভেন্ট এবং মেকানিকস রয়েছে যা আপনাকে ম্যাচে অতিরিক্ত সুবিধা দিতে পারে। আমরা অনেকেই এই ইভেন্টগুলোকে গুরুত্ব দিই না বা তাদের সঠিক ব্যবহার জানি না, ফলে জয়ের সুযোগ হাতছাড়া করি। আমার নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, অনেক সময় ম্যাচের শেষ দিকে হাইপারলুপ বা উইক জোন ইভেন্টের সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে আমি একটি হেরে যাওয়া ম্যাচকেও জয়ের দিকে নিয়ে আসতে পেরেছি। এই ইভেন্টগুলো শুধু আপনাকে আইটেম বা এক্সপি দেয় না, বরং আপনাকে কৌশলগতভাবে এগিয়ে থাকার সুযোগও করে দেয়। ম্যাপে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা এই সুযোগগুলোকে কাজে লাগানো মানেই হলো প্রতিপক্ষের চেয়ে এক ধাপ এগিয়ে থাকা। আপনি যখন এই ইভেন্টগুলো সম্পর্কে পুরোপুরি জানেন এবং সেগুলোকে দক্ষতার সাথে ব্যবহার করতে পারেন, তখন আপনি গেমের গতিপথ নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন এবং প্রতিপক্ষকে সারপ্রাইজ দিতে পারেন।
হাইপারলুপ এবং উইক জোনের ব্যবহার
হাইপারলুপ (Hyperloop) এবং উইক জোন (Wickeline) ইটারনাল রিটার্ন-এর দুটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট যা ম্যাচের ফলাফলকে প্রভাবিত করতে পারে। হাইপারলুপ আপনাকে ম্যাপের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে দ্রুত ভ্রমণ করার সুযোগ দেয়। আমি দেখেছি, যখন আমি আমার টিমমেটদের থেকে দূরে ছিলাম এবং একটি ফাইটে দ্রুত পৌঁছাতে হয়েছিল, তখন হাইপারলুপ ব্যবহার করে আমি সময় মতো সেখানে পৌঁছাতে পেরেছিলাম এবং টিমকে সাহায্য করতে পেরেছিলাম। এটি আপনাকে দ্রুত আইটেম সংগ্রহ করতে, বন্য প্রাণীদের কাছে পৌঁছাতে বা এমনকি বিপদজনক জোন থেকে পালাতে সাহায্য করতে পারে। অন্যদিকে, উইক জোন হলো একটি শক্তিশালী বস প্রাণী যা ম্যাপের নির্দিষ্ট স্থানে স্পন হয়। উইক জোনকে মারলে আপনি “Eye of the Storm” নামক একটি শক্তিশালী বাফ পাবেন, যা আপনার আক্রমণ ক্ষমতা এবং ডিফেন্সকে বাড়িয়ে দেয়। এই বাফটি ম্যাচের শেষের দিকের ফাইটে আপনাকে এবং আপনার টিমকে এক বিশাল সুবিধা দেবে। উইক জোন ফাইটে অংশগ্রহণ করার সময় আপনাকে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে, কারণ প্রতিপক্ষরাও এই বাফটি নেওয়ার চেষ্টা করবে। তাই, আপনার টিমের সাথে সমন্বয় করে উইক জোন ফাইট করার পরিকল্পনা করুন।
নিষিদ্ধ এলাকা এবং শেষ মুহূর্তের কৌশল
ম্যাচের শেষ দিকে নিষিদ্ধ এলাকা (Restricted Area) এবং শেষ মুহূর্তের কৌশলগুলো ইটারনাল রিটার্ন-এর জয়ের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যখন ম্যাপের কিছু এলাকা নিষিদ্ধ হয়ে যায়, তখন খেলোয়াড়দের একটি ছোট জোনের মধ্যে একত্রিত হতে হয়। এই সময়টি কৌশলগত পজিশনিং এবং আক্রমণের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমি অনেকবার দেখেছি, যে টিম নিষিদ্ধ এলাকার মেকানিকস সম্পর্কে ভালো জানে এবং সেগুলোকে কাজে লাগাতে পারে, তারাই শেষ পর্যন্ত জয়ী হয়। নিষিদ্ধ এলাকাগুলো আপনাকে প্রতিপক্ষকে একটি নির্দিষ্ট কোণে আটকে রাখতে বা তাদের পালানোর পথ বন্ধ করতে সাহায্য করতে পারে। শেষ জোনে প্রবেশের আগে আপনার ইনভেন্টরি (Inventory) এবং আইটেম বিল্ড পরীক্ষা করুন। আপনার কি কোনো অতিরিক্ত হিলিং আইটেম বা ইউটিলিটি আইটেম দরকার?
আপনার বিল্ড কি প্রতিপক্ষের সাথে ফাইট করার জন্য প্রস্তুত? এই প্রশ্নগুলোর উত্তর আপনাকে শেষ মুহূর্তে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করবে। এছাড়াও, শেষ জোনে প্রবেশের সময় আপনার টিমের সাথে পরিকল্পনা করুন। কে কোথায় পজিশন নেবে, কে কাকে টার্গেট করবে এবং কখন আক্রমণ শুরু করবে। এই সমস্ত বিষয়গুলো যদি আপনি সঠিক পরিকল্পনা করে করেন, তাহলে আপনি শেষ মুহূর্তে প্রতিপক্ষকে সহজেই পরাজিত করতে পারবেন।
| চরিত্রের ধরন | সেরা কিছু উদাহরণ | বিশেষ ক্ষমতা/সুবিধা | সাধারণ প্রাথমিক রুট |
|---|---|---|---|
| অ্যাটাকার (রেন্জড) | আয়া, নাথান, এমা | উচ্চ ড্যামেজ আউটপুট, নিরাপদ দূরত্ব থেকে আক্রমণ | চ্যাপেল -> স্কুল -> বিচ |
| অ্যাটাকার (মেলি) | জ্যাকি, লিওন, রেন | উচ্চ ড্যামেজ, দ্রুত প্রতিপক্ষকে কাবু করা | ডকস -> ফ্যাক্টরি -> অ্যাভিনিউ |
| ট্যাঙ্ক/ব্রুইজার | হিয়োন, লুক, মারটি | উচ্চ প্রতিরক্ষা, টিমকে রক্ষা করার ক্ষমতা | ফরেস্ট -> ডকস -> হসপিটাল |
| সাপোর্টার | ফেলি, প্রাইম | টিমমেটদের সাহায্য, হিলিং, CC | আর্কাইভ -> রিসার্চ ল্যাব -> মন্দির |
글을마치며
বন্ধুরা, ইটারনাল রিটার্নে সর্বোচ্চ স্কোর করার এই দীর্ঘ পথচলায় আমি আপনাদের সাথে আমার সবটুকু অভিজ্ঞতা শেয়ার করলাম। আমি জানি, প্রতিটি গেমের পেছনে আমাদের কতটা প্যাশন থাকে, কত রাত নির্ঘুম কাটে শুধু একটি জয়ের আশায়। আমার বিশ্বাস, এই টিপসগুলো আপনাদের খেলার ধরনকে আরও শাণিত করবে এবং আপনাকে প্রতিপক্ষের চেয়ে এক ধাপ এগিয়ে রাখবে। মনে রাখবেন, অভিজ্ঞতা একদিনে হয় না, প্রতিটি ম্যাচই নতুন কিছু শেখার সুযোগ নিয়ে আসে। নিজেকে বিশ্বাস করুন, অনুশীলনে মনোযোগ দিন এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, খেলাটা উপভোগ করুন! কারণ দিনের শেষে, আনন্দই তো সব।
এই গেমটা শুধু স্কিল আর কৌশল দিয়ে নয়, মানসিকতার জোর দিয়েও জিততে হয়। আমি নিজে যখন হতাশ হয়েছি, তখন বারবার এই কথাটাই নিজেকে বলেছি, “আজকের হার মানে আগামীকালের জয়ের প্রস্তুতি।” তাই কখনোই হাল ছাড়বেন না। প্রতিটি ভুল থেকে শিখুন, আপনার টিমমেটদের সাথে আরও ভালোভাবে যোগাযোগ করুন, আর ম্যাপের প্রতিটি কোণাকে আপনার সুবিধা মতো ব্যবহার করুন। তাহলেই দেখবেন, আপনার র্যাঙ্ক বাড়ছে আর আপনি হয়ে উঠছেন আরও শক্তিশালী একজন ইটারনাল রিটার্ন প্লেয়ার। আপনার যাত্রা শুভ হোক!
알া দুলেম স্মলু ইতরনাল রিটার্ন এর কিছু তথ্য
-
আপনি যখন গেমের শুরুতেই নামছেন, চেষ্টা করুন এমন একটি রুটে যেতে যেখানে আপনার পছন্দের চরিত্রের জন্য দ্রুত কোর আইটেমগুলো পাওয়া যায়। আমার অভিজ্ঞতা বলে, যারা প্রথম ৩-৪ মিনিটের মধ্যে তাদের প্রধান আইটেম সংগ্রহ করতে পারে, তারা ম্যাচের শুরুতে একটি বিশাল সুবিধা পায় এবং প্রতিপক্ষকে সহজেই কাবু করতে পারে। এটি আপনাকে প্রথম দিকে বন্য প্রাণী মেরে এক্সপি (XP) অর্জনেও সাহায্য করবে।
-
প্রতিটি প্যাচ আপডেটের পর গেমের মেটা (Most Effective Tactics Available) পরিবর্তিত হয়। নিয়মিতভাবে অফিসিয়াল প্যাচ নোটস এবং বিভিন্ন গেমপ্লে ফোরামগুলো দেখুন। আমি দেখেছি, অনেকেই শুধুমাত্র পছন্দের চরিত্র নিয়ে খেলে, কিন্তু মেটা পরিবর্তন হওয়ায় তারা পিছিয়ে পড়ে। শক্তিশালী হওয়ার জন্য বর্তমান মেটা অনুযায়ী চরিত্র এবং বিল্ড বেছে নেওয়া খুবই জরুরি।
-
টিমমেটদের সাথে স্পষ্ট এবং কার্যকর যোগাযোগ রাখুন। ইন-গেম ভয়েস চ্যাট বা পিন সিস্টেম ব্যবহার করে প্রতিপক্ষের অবস্থান, আপনার আক্রমণের পরিকল্পনা বা কখন পিছু হটবেন, তা নিয়ে আলোচনা করুন। আমার মনে আছে, একবার শুধু যোগাযোগের অভাবে আমরা একটি সহজ ম্যাচ হেরেছিলাম। ভালো যোগাযোগ মানেই হলো ভালো টিমওয়ার্ক।
-
প্রতিটি ম্যাচের পর আপনার গেমপ্লে পর্যালোচনা করুন। এমনকি জিতলেও, কোথায় আপনি আরও ভালো করতে পারতেন বা কোন ভুলগুলো এড়ানো যেত, তা দেখুন। আমি নিজে আমার গেমপ্লে রেকর্ড করে দেখি, যা আমাকে আমার দুর্বলতাগুলো চিহ্নিত করতে এবং সেগুলো উন্নত করতে সাহায্য করে। ভুল থেকে শেখাটাই সাফল্যের আসল চাবিকাঠি।
-
ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট, যেমন হাইপারলুপ এবং উইক জোন (Wickeline) এর সঠিক ব্যবহার শিখুন। হাইপারলুপ আপনাকে দ্রুত ম্যাপের এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতে সাহায্য করে, আর উইক জোনের বাফ আপনাকে শেষের দিকের ফাইটে বিশাল সুবিধা দিতে পারে। এই ইভেন্টগুলো আপনার জয়ের সম্ভাবনা বাড়ানোর জন্য কৌশলগতভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো এক নজরে
১. খেলার ধরন অনুযায়ী চরিত্র নির্বাচন
ইটারনাল রিটার্নে সেরা পারফরম্যান্সের জন্য আপনার নিজস্ব খেলার স্টাইলের সাথে মানানসই চরিত্র বেছে নেওয়াটা অত্যন্ত জরুরি। আমি আমার দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, শুধুমাত্র জনপ্রিয় বা শক্তিশালী চরিত্রের পেছনে ছুটে আপনি সফল হতে পারবেন না, যদি সেই চরিত্রটি আপনার খেলার ধরনকে সমর্থন না করে। নিজেকে প্রশ্ন করুন, আপনি কি একজন আগ্রাসী খেলোয়াড়, নাকি একটু সতর্ক থেকে খেলতে পছন্দ করেন? আপনি কি দলনেতা হিসেবে সামনে থাকতে ভালোবাসেন, নাকি পেছন থেকে সমর্থন দিতে পছন্দ করেন? এই উত্তরগুলো আপনাকে সঠিক চরিত্র বেছে নিতে সাহায্য করবে। প্রতিটি নতুন প্যাচের সাথে মেটা চরিত্র পরিবর্তিত হয়, তাই নিয়মিত গেমের আপডেটগুলো অনুসরণ করা উচিত। এতে আপনি সবসময় সবচেয়ে কার্যকর চরিত্রগুলো সম্পর্কে অবগত থাকতে পারবেন এবং আপনার টিমকে জয়ের পথে এগিয়ে নিতে পারবেন।
২. সুচিন্তিত রুট এবং আইটেম বিল্ড
একটি সুপরিকল্পিত রুট এবং পরিস্থিতি অনুযায়ী আইটেম বিল্ড আপনার খেলাকে অন্য স্তরে নিয়ে যেতে পারে। আমার নিজের অভিজ্ঞতায় দেখেছি, যখন আমি একটি পরিষ্কার রুট ম্যাপে নিয়ে নামি এবং দ্রুত আমার কোর আইটেমগুলো সংগ্রহ করতে পারি, তখন ম্যাচের শুরুতেই আমি প্রতিপক্ষের চেয়ে অনেক এগিয়ে থাকি। এটি আমাকে দ্রুত পাওয়ার স্পাইক অর্জন করতে এবং বন্য প্রাণী মেরে এক্সপি ও ক্রেডিট সংগ্রহ করতে সাহায্য করে। এছাড়াও, প্রতিপক্ষের টিম কম্পোজিশন অনুযায়ী আপনার আইটেম বিল্ড পরিবর্তন করার মানসিকতা রাখুন। যদি প্রতিপক্ষ টিমে ম্যাজিক ড্যামেজ বেশি থাকে, তাহলে ম্যাজিক রেজিস্টেন্স বাড়ান; যদি ফিজিক্যাল ড্যামেজ বেশি থাকে, তাহলে আর্মার বাড়ান। এই নমনীয়তা আপনাকে যেকোনো পরিস্থিতিতে টিকে থাকতে এবং সফল হতে সাহায্য করবে।
৩. মানচিত্র নিয়ন্ত্রণ এবং কৌশলগত উদ্দেশ্য
ইটারনাল রিটার্নে শুধু কিল পাওয়ার পেছনে ছুটলে হয় না, কৌশলগতভাবে মানচিত্র নিয়ন্ত্রণ করা এবং বিভিন্ন উদ্দেশ্য (Objectives) সঠিকভাবে ব্যবহার করাও সমান গুরুত্বপূর্ণ। আমার মতে, যে টিম ম্যাপের গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে তাদের দখল বজায় রাখতে পারে, তাদের জয়ের সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। বন্য প্রাণী, বিশেষ করে আলফা, ওমেগা এবং উইক জোন-এর মতো বস প্রাণীগুলো আপনাকে প্রচুর এক্সপি, ক্রেডিট এবং শক্তিশালী বাফ দেয়। এই বাফগুলো ম্যাচের শেষের দিকে পার্থক্য গড়ে দিতে পারে। তাই, বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনায় মনোযোগ দিন এবং তাদের স্পন টাইমিং মনে রাখুন। এছাড়াও, হাইপারলুপ ব্যবহার করে দ্রুত ভ্রমণ এবং নিষিদ্ধ এলাকার সঠিক ব্যবহার আপনাকে কৌশলগতভাবে প্রতিপক্ষের উপর চাপ তৈরি করতে সাহায্য করবে এবং জয়ের পথ প্রশস্ত করবে।
৪. কার্যকর টিমওয়ার্ক এবং যোগাযোগ
ইটারনাল রিটার্ন একটি টিম-ভিত্তিক খেলা, এবং এখানে একা একা সবকিছু করা প্রায় অসম্ভব। আমার বহু অভিজ্ঞতায় দেখেছি, ব্যক্তিগতভাবে ভালো খেললেও টিমের মধ্যে সঠিক সমন্বয় এবং যোগাযোগের অভাবে আমরা হেরে গেছি। আপনার টিমের প্রতিটি সদস্যের একটি নির্দিষ্ট ভূমিকা থাকে এবং সেই ভূমিকা অনুযায়ী কাজ করাটা খুব জরুরি। একে অপরের শক্তি ও দুর্বলতা বোঝা, সঠিকভাবে যোগাযোগ করা এবং ম্যাচের প্রতিটি মুহূর্তে একে অপরকে সমর্থন করাটাই আসল টিমওয়ার্ক। ইন-গেম ভয়েস চ্যাট বা পিন সিস্টেম ব্যবহার করে নিয়মিত যোগাযোগ রাখুন। কে কোথায় যাচ্ছে, কাকে আক্রমণ করবে, বা কখন পিছু হটবে – এই সমস্ত বিষয়ে স্পষ্ট আলোচনা অপরিহার্য। একটি সুসংগঠিত টিম তাদের সম্মিলিত শক্তিতে যেকোনো প্রতিপক্ষকে পরাজিত করতে পারে।
৫. ইতিবাচক মানসিকতা এবং ধারাবাহিক অনুশীলন
সফল খেলোয়াড় হওয়ার জন্য শুধু গেমপ্লে দক্ষতা থাকলেই হয় না, আপনার মানসিকতাও একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আমি নিজেও অনেকবার ভুল করার পর হতাশ হয়েছি, কিন্তু সেই হতাশা কাটিয়ে উঠে ভুল থেকে শিক্ষা নেওয়াটাই আসল ব্যাপার। প্রতিটি ম্যাচকে শেখার সুযোগ হিসেবে নিন, জিতুন বা হারুন না কেন। চাপ সামলানো এবং শান্ত থাকা আপনাকে আরও ভালো সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করবে, বিশেষ করে গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তগুলোতে। নিজেকে মনে করিয়ে দিন যে এটি কেবল একটি খেলা এবং ভুল হওয়াটা স্বাভাবিক। নিয়মিত অনুশীলন করুন, আপনার গেমপ্লে পর্যালোচনা করুন এবং একটি ইতিবাচক মানসিকতা নিয়ে প্রতিটি ম্যাচে আপনার সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করুন। মনে রাখবেন, ধারাবাহিকতা এবং শেখার আগ্রহই আপনাকে দীর্ঘমেয়াদে একজন উন্নত খেলোয়াড় হিসেবে গড়ে তুলবে।
প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন (FAQ) 📖
প্র: ইটারনাল রিটার্নে বর্তমান মেটা এবং কোন ক্যারেক্টারগুলো এখন সবচেয়ে শক্তিশালী?
উ: এই প্রশ্নের উত্তরটা আসলেই খুব গুরুত্বপূর্ণ, কারণ মেটা তো প্রায়ই বদলায়! আমার নিজের অভিজ্ঞতায় দেখেছি, একটা প্যাচে যেই ক্যারেক্টার রাজা, পরের প্যাচেই সে সাধারণ হয়ে যায়। বর্তমানে, অ্যাটাকার ক্যারেক্টারগুলোর মধ্যে কিছু নির্দিষ্ট বিল্ড এবং খেলার ধরণ খুব জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। যেমন, কিছু লং-রেঞ্জ অ্যাটাকার যেমন ‘আয়ুদা’ বা ‘লারা’ সঠিক বিল্ড আর প্লেস্টাইল দিয়ে অসাধারণ প্রভাব ফেলছে। এদের ক্রিপটিক স্ট্যাক এবং ড্যামেজ আউটপুট প্রতিপক্ষকে মুহূর্তেই কাবু করতে পারে। এছাড়া, ট্যাকটিক্যাল স্পোর্টসম্যান ‘লিন’ তার গতি এবং আক্রমণের সমন্বয়ে প্রতিপক্ষকে হতভম্ব করে দিচ্ছে। আমি নিজে লিন নিয়ে বেশ কিছু ম্যাচ খেলে দেখেছি, তার মোবিবিলিটি আর ড্যামেজ দুটোই এই মেটায় খুব প্রাসঙ্গিক। কিছু ট্যাঙ্কি ক্যারেক্টারও আছে যারা টিকে থাকার সাথে সাথে ভালো ড্যামেজও দিতে পারে, যেমন ‘আদ্রিয়ানা’ বা ‘ইয়াল্লু’। এদের বিল্ডে কিছু নির্দিষ্ট কোর আইটেম যেমন ‘ট্যুইন সোয়ার্ডস’ বা ‘ফোকাল পয়েন্ট’ দারুণ কাজ দিচ্ছে। মনে রাখবেন, শুধু ক্যারেক্টার নয়, আপনার টিমের সাথে সিনার্জি এবং সঠিক আইটেম বিল্ডই আপনাকে এগিয়ে রাখবে। চেষ্টা করুন টিমের প্রয়োজন অনুযায়ী ক্যারেক্টার বেছে নিতে, এটাই সেরা কৌশল।
প্র: ইটারনাল রিটার্নে দ্রুত স্কিল উন্নত করার এবং আরও ভালোভাবে পারফর্ম করার সেরা উপায়গুলো কী?
উ: ইটারনাল রিটার্নে ভালো খেলতে হলে শুধু ক্যারেক্টার বা বিল্ড জানলেই চলে না, নিজের স্কিলও শানাতে হয়। আমার মতে, এর জন্য প্রথমত দরকার ম্যাপ সেন্স। আমি নিজেও যখন প্রথম খেলা শুরু করি, ম্যাপ নিয়ে একদমই ধারণা ছিল না। পরে বারবার খেলে এবং ম্যাপের প্রতিটি কোণা বুঝে নিয়েছি। কোথায় কখন রিসোর্স পাওয়া যায়, কোন জোনে বেশি লড়াই হয়, বা কখন কোথায় লুকিয়ে থাকা নিরাপদ – এগুলো জানাটা খুবই জরুরি। দ্বিতীয়ত, আপনার পছন্দের ক্যারেক্টারের প্রতিটি স্কিল সম্পর্কে একদম খুঁটিনাটি জানতে হবে। কখন কোন স্কিল ব্যবহার করলে সবচেয়ে বেশি কাজে দেবে, তা অনুশীলনের মাধ্যমেই শেখা যায়। আমি নিজেই ‘লিন’ নিয়ে অনেক সময় ট্রেনিং মোডে কাটিয়েছি শুধু তার কম্বোগুলো রপ্ত করার জন্য। তৃতীয়ত, মিনি-ম্যাপে নিয়মিত চোখ রাখাটা খুব দরকারি। প্রতিপক্ষের গতিবিধি দেখলে আপনি আগে থেকেই পরিকল্পনা করতে পারবেন। আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ টিপস হলো, ভুল থেকে শেখা। প্রতিটি ম্যাচের পর রিভিউ করুন, কোথায় আপনার ভুল হয়েছে এবং কীভাবে সেটা এড়ানো যেত। এটা শুনতে একটু বোরিং লাগতে পারে, কিন্তু আমি গ্যারান্টি দিচ্ছি, এই অভ্যাস আপনার খেলাকে রাতারাতি বদলে দেবে।
প্র: ইটারনাল রিটার্নে টিম প্লে করার সময় কী কী বিষয় মনে রাখা উচিত এবং কীভাবে দলের সাথে কার্যকরভাবে যোগাযোগ করা যায়?
উ: ইটারনাল রিটার্ন শুধু আপনার একার খেলা নয়, এটি একটি টিম গেম। আমার নিজের অভিজ্ঞতা বলে, একটা শক্তিশালী টিম ছাড়া জেতাটা প্রায় অসম্ভব। টিম প্লে করার সময় প্রথমত মনে রাখবেন, প্রতিটি টিমেরই একজন ‘শট-কলিং’ লিডার থাকা উচিত। যিনি ম্যাচের পরিস্থিতি অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপের নির্দেশ দেবেন। আমি নিজে এমন টিমের সাথে খেলেছি যেখানে কোনো শট-কলিং ছিল না, আর ফলাফল ছিল বিশৃঙ্খলা। দ্বিতীয়ত, নিজেদের ক্যারেক্টারদের মধ্যে সিনার্জি তৈরি করুন। যদি আপনার একজন অ্যাটাকার থাকে, তার সাথে একজন সাপোটার বা ট্যাঙ্কার খুব ভালো কাজ করবে। তৃতীয়ত, যোগাযোগ!
এটা ছাড়া টিম প্লে একদম অচল। ভয়েস চ্যাট ব্যবহার করাটা খুবই কার্যকরী। প্রতিপক্ষের অবস্থান, আপনার স্কিল কুলডাউন, বা কখন অ্যাটাক করা উচিত – এই তথ্যগুলো দ্রুত শেয়ার করলে টিমের কার্যকারিতা কয়েকগুণ বেড়ে যায়। আমি যখন বন্ধুদের সাথে খেলি, তখন আমরা সবসময় নিজেদের পরিকল্পনার কথা জানিয়ে দিই, এমনকি ছোটখাটো জিনিসও। চতুর্থত, রিসোর্স শেয়ারিং। অতিরিক্ত আইটেম থাকলে বা আপনার টিমের কারো একটা নির্দিষ্ট আইটেম জরুরি হলে তা শেয়ার করুন। মনে রাখবেন, টিম হিসেবে জেতাটাই আসল, ব্যক্তিগত স্কোর নয়। শেষ কথা হলো, নিজেদের মধ্যে ভরসা রাখুন এবং একে অপরের প্রতি সমর্থন দিন। টিম ওয়ার্কই স্বপ্নের কাজ করে।






